ঢাকা জেলার ভাষাকে সাধারণত: পূর্ববঙ্গীয় ভাষা নামে অভিহিত করা হয়। কেননা যদিও এ অঞ্চলের ভাষা মুগল বাংলা ভাষারই অঞ্চল। তবে কথোপকথনে এর ঢঙ একটু ভিন্ন এবং এ ভিন্নতার রীতিগুলি স্থানীক ভাষার জন্ম দিয়েছে, যেমন বিভিন্ন শব্দের সাথে ই অক্ষর যোগ করে ব্যবহারের ফলে ভিন্নতা সৃষ্টি হয়েছে। যেমন ‘করিয়াছ’ শব্দটিকে ‘কইরাছ’ ব্যবহার। তাহলেও এ স্থানীক ভাষা বাংলা ভাষার অন্তর্গত একটি চমৎকার উদাহরণ যা অনুকরণীয়ও বটে। বাংলাভাষা আধুনিক রূপ নেয়ার পরে উনবিংশ শতাব্দীতে ঢাকা জেলার বহু লেখক ও সাহিত্যিক তাদের সাহিত্য কর্মের মাধ্যমে বাংলাভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে, যেমন- হরিশচন্দ্র মিত্র, দীনবন্ধু মিত্র ইত্যাদি। বর্তমান সময়ে ঢাকা জেলায় বাংলাভাষায় উত্তমমানের সাহিত্য চর্চা অতীতের সাধুভাষার পরিবর্তে চলিত ভাষায় ব্যবহার স্থায়ীত্ব লাভ করেছে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য মহানগরী ঢাকার এক শ্রেণীর জনগোষ্ঠী বাংলা, উর্দু, হিন্দী, ফার্সী মিশ্রিত এক প্রকার ভাষার ব্যবহার করে যা ঢাকাইয়া ভাষা বা উপভাষা নামে পরিচিত। তবে এই ভাষাটির চর্চা ধীরে ধীরে কমে আসছে (দেখুন ঢাকাই উপভাষা প্রবাদ প্রবচন কৌতুক ছড়া, এশিয়াটিক সোসাইটি, এপ্রিল ২০১২)
ঢাকার সংস্কৃতি আবহমানকাল থেকে বিবর্তিত হয়ে এক বর্ণাঢ্য রূপ নিয়েছে। এই সংস্কৃতির পেছনে ঢাকা অঞ্চলের আবহাওয়া, জলবায়ু, স্থান প্রভাব রেখেছে তেমনি পৃথিবীর প্রধান প্রধান ধর্ম যেমন বৌদ্ধ, হিন্দু, ইসলাম, খ্রিষ্টান ধর্ম এবং বিশ্বব্যাপি নানা স্থান থেকে আগত বিভিন্ন ভাষাভাষি মানুষের ভাষা আচার আচরণ খাদ্যাভাস, পোষাক পরিচ্ছদ, সংস্কৃতি, সাহিত্য ইত্যাদি নিয়ে গড়ে উঠেছে। ঢাকা জেলার সংস্কৃতি যেমন একাধারে বাংলাদেশের সংস্কৃতিরই অংশ তবুও এর কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন খাদ্যাভাসে, পোষাকে, সংগীতে, লোকগীতিতে, শিল্পকর্মে, খেলাধুলা, স্থাপত্যে, হস্তলিপি এবং অন্যান্য সৃষ্টিশীল কর্মক্ষেত্রে। তবে অনেকটা নিশ্চিত করেই বলা যায় এ সংস্কৃতি উদার, অসাম্প্রদায়িক এবং নিজ স্বকীয়তায় বৈশিষ্টপূর্ণ।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস